ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

আগুনে পুড়ছে বনের গাছপালা

চকরিয়ার খুটাখালীতে বনভুমি দখলের নিতে বনে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে পর্যটননগরী কক্সবাজার যাওয়ার পথে খুটাখালী এলাকা পার হওয়ার সময় চোখে পড়ে মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান। এই উদ্যানের ৩৯৫.৯২ হেক্টরজুড়ে দাঁড়িয়ে আছে অন্তত ১০ হাজার শতবর্ষী মাদার ট্রি (গর্জনগাছ)। পাশাপাশি অন্যান্য প্রজাতির গাছও রয়েছে। কিন্তু একটি চক্র জমি দখলের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়ে বনের গাছপালা ও ঝোপঝাড় পুড়িয়ে ফেলছে।

এতে ঝুঁকিতে পড়েছে গর্জন বনটি। তা ছাড়া বন সংরক্ষণে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিলেও রহস্যজনক কারণে এর কাজ থমকে আছে।
বন অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানটি কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন। উদ্যানের এক থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে আনুমানিক সাড়ে তিন হাজার পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবার মূলত কৃষিকাজ, লবণ চাষ ও মৎস্য চাষের ওপর নির্ভরশীল। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে এখানেও ক্রমান্বয়ে জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে। কিন্তু এই জাতীয় উদ্যান একেবারেই অরক্ষিত। প্রায় এক যুগ আগে থেকে এই উদ্যান রক্ষায় চারিদিকে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণেরও পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রতিনিয়ত এই উদ্যানের গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকে চকরিয়া নিউজকে বলেন, বন দখলের উদ্দেশ্যেই একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে আগুন দিয়ে থাকে। আগুনে গাছপালা পুড়ে সাফ হয়ে গেলে সুবিধাজনক সময়ে সেখানে ঘর নির্মাণ করে জায়গা দখলে নেওয়া হয়।

বনে কারা আগুন দিয়েছে—সে বিষয়ে নিশ্চিত নন জানিয়ে মেদাকচ্ছপিয়া বিট কর্মকর্তা শাহীন আলম চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে উদ্যান। ’

উদ্যানের আরেক অংশ নরফাঁড়ি বনে আগুন লাগার বিষয়ে খুটাখালী বনবিট কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, ‘রাতের আঁধারে সংঘবদ্ধ একটি বনখেকোচক্র নরফাঁড়ি গর্জনবাগানে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই আগুন দেখতে পেয়ে আশপাশের লোকজন খবর দেয়। এরপর সহকর্মীদের নিয়ে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে আগুনে উদ্যানের সংরক্ষিত বনভূমির দেড় একরের মতো জায়গার ছোট ছোট গাছপালা ও ঝোপঝাড় পুড়ে গেছে। ’

এ ব্যাপারে কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফুলছড়ি রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমদ বাবুল চকরিয়া নিউজকে বলেন, ‘কিছু লোক কয়লা তৈরির জন্য বনে আগুন দিয়ে থাকে। হয়তো সেখান থেকে আগুন লাগতে পারে। ’

পাঠকের মতামত: